☞ ০৭ সেপ্টেম্বর,২০১৮, সন্ধ্যা ➤
স্মৃতির পাতায় এখনও স্পষ্ট সবকিছুৃ। যদিও প্রায় দেড় বছর আগের কথা। এক্সাক্ট ডেট ফেসবুকের কল্যাণে নির্ধারণ করতে পারলাম। ঐ দিন সন্ধ্যায় আমার জীবনের অন্যতম সেরা এবং ব্যতিক্রমধর্মী ট্যুর; সিলেট ট্যুরের প্ল্যান ফিক্সড হয়। ঐ দিন সন্ধ্যায় নিয়মিত আড্ডায় আমরা ৬ বন্ধু Quazi Pial Shoeb ShahRiar Ali Hawk Kazi Rahat JaHir IsLam ধানমন্ডিতে একত্রিত হয়েছিলাম, ঢাকা শহরের যান্ত্রিক জীবনে সবাই অতীষ্ট।হঠাৎ চিন্তা আসলো একটা ট্যুর দেওয়া দরকার কিছুটা রিফ্রেশমেন্টের জন্য।
যেমন কথা তেমন কাজ। ৬ বন্ধু মিলে হুটহাট সিদ্ধান্ত পরবর্তী দিনই ট্যুরে যাবো। ট্যুরের ক্ষেত্রে যদিও হুটহাট সিদ্ধান্তগুলোই কার্যকর বেশী। ট্যুরটিকে ব্যতিক্রমী বলেছিলাম, কারণ ৬ বন্ধু ৩ বাইকে (২টি Pulsar, ১টি FAZER) সিলেট ট্যুর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখন রাত প্রায় ৮-৯ বেজে গেছে। কোনো রকমে প্রস্তুতি নিয়ে সবাই রাজারবাগে পিয়ালের বাসায় একত্রিত হই। খুবই এক্সাইটেড ছিলাম,যার দরুন রাতে ঘুমও হয়েছিলো না ঠিক মতো। 


☞ ০৮ সেপ্টেম্বর,২০১৮ ➤
অবশেষে পরদিন খুব সকালে যাত্রা শুরু করেছিলাম হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর পূণ্য ভূমি সিলেটের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার সময় ◑ ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ-হবিগঞ্জ- সুনামগঞ্জ-সিলেট ◑ রুটে গিয়েছিলাম। সময় ও দূরত্ব দুটোই সাশ্রয় হয়েছিলো। দুপুর ১টা নাগাদ পৌঁছে যাই হযরত শাহজালাল (রাঃ) পূণ্য ভূমি সিলেট শহরে। সবাই খুব ক্লান্ত ছিলাম, তাই হোটেলে চেক ইন করে কিছুটা বিশ্রাম, খাওয়া-দাওয়া করে রাতে সিলেট শহরের ভেতরে কিছুটা চক্কর দেই। 

☞ ০৯ সেপ্টেম্বর,২০১৮ ➤
পরদিন সকালে রওনা দেই বিছানাকান্দি এর উদ্দেশ্যে। জাফলং আমরা যায় নি,কারণ জাফলং এর থেকে এখন বিছানাকান্দি বেষ্ট। আর আমাদের সিদ্ধান্ত ভুলও ছিলো না। বিছানাকান্দি আসলেই অনন্য সুন্দর ছিলো। সারা দিন ঘুরাঘুরি করে বিকাল হয়ে যায় সিলেট শহরে পৌঁছাতে। কোনো রকম লাঞ্চ করেই পড়ন্ত বিকালে সিলেট শহরের আশেপাশে চা বাগানে ঘুরাঘুরি করি। রাতে হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর মাজারে সময় কাটাই যা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। 

☞ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮➤
পরদিন সকালে রওনা দেই রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের উদ্দেশ্যে। রাতারগুলে বোট রাইড দিয়ে ও ওর সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে ফিরতে দেরী হওয়ায় লালাখাল মিস করে ফেলি।
যা ছিলো চরম আফসোসের ব্যাপার।
সন্ধ্যার ভেতর সিলেট শহরে ফিরে আসি আর হোটেলে না গিয়ে সরাসরি চলে যাই হযরত শাহ্ পরান (রাঃ) এর মাজারের উদ্দেশ্যে, যা শহর থেকে ২৫-৩০ কিঃ মিঃ দূরে অবস্থিত। সেখান থেকে ফিরতে রাত ১১টা বেজে যায়।



১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ➤
পরদিন সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করি। এবার আমরা শ্রীমঙ্গল হয়ে আসি যাওয়ার সময় তা মিস হয়ে যাওয়ায়। শ্রীমঙ্গলে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করি যেমনঃ টি মিউজিয়াম, টি বোর্ড, রাবার বাগান, চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি। ঢাকায় ফিরতে রাত ৯টা বেজে গিয়েছিল । ফিরে আসার রুট ◑ সিলেট- মৌলভীবাজার -হবিগঞ্জ- কিশোরগঞ্জ- নারায়ণগঞ্জ- ঢাকা◑। এ ভাবেই শেষ হয়েছিলো আমার জীবনের অন্যতম সেরা সিলেট ট্যুর। 





☞ শেষ কথা➤
অনেক রিস্ক ছিলো, ভয় ছিলো তা ও সেটা জয় করতে পেরেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ।
আর বাইক ট্যুরে অর্থ,সময় সবই সাশ্রয় হয় এবং অনুভূতিও অসাধারণ। 


সব থেকে ভয়ঙ্কর যে কথা সেটা হচ্ছে আমাদের তিনজন অভিজ্ঞ রাইডারের পিছনে আমরা যে তিনজন ছিলাম তার দুইজন কেউ ই খুব ভালো বাইক চালাতে পারতাম না।
এক্সাইটমেন্টের ঠেলায় এগুলো তোয়াক্কা করেছিলাম না।
তার ভেতর আমিও একজন ছিলাম।
যদিও এত রিস্ক নেওয়া উচিত না,এখন বুঝি। 




☞ খরচ ➤
ওই ভাবে বিস্তারিত মনে নেই। তবে আনুমানিক ( বাইকের জ্বালানী খরচ+ হোটেল + খাওয়া দাওয়া সহ) ২২০০-২৫০০ এর ভেতর সম্পূর্ণ ভ্রমণ সম্পন্ন করেছিলাম। 

ধন্যবাদ। 



লেখাঃ মোহাম্মদ জিহাদুল হাসান
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।