আমার প্রথম সমুদ্র দেখা আমার ভালোবাসার মানুষ টির সাথে। যদিও মা বলেন আমি যখন খুব ছোট তখন বাবার সরকারি চাকুরীর সুবাদে কক্সবাজারে থাকায় প্রায় বিকেল বেলা আমায় কোলে করে নিয়ে যেতেন সমুদ্রের ধারে। সে গুলো কিছুই যদিও আমার মনে নেই।
তো যা বলছিলাম প্রথম সমুদ্র আমি দেখেছিলাম সেইন্ট মার্টিন এ। শিপে চড়ার অভিজ্ঞতা ও সেই প্রথম। শিপ যখন জল কেটে কেটে এগুচ্ছিলো আর পানিও ততই নীল হচ্ছিলো। এত নীল জল অবাক হয়ে দেখছিলাম। শিপ থেকে নেমে একটু ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়ার পর এবার গেলাম জলের ধারে। সমুদ্রের ঠান্ডা জলে পা ভিজানো মাত্র মন প্রান জুড়িয়ে গেলো। প্রথম বার এত নীল জল দেখে নিজেকে আটকাতে পারছিলাম না। বার বার জলের মধ্যে ছুটোছুটি করছিলাম। তিনি বেশি ভিজতে দিচ্ছিলেন না, জ্বর করবে বলে উঠে আসতে বললেন। অগত্যা উঠে আসা। এবার দেখলাম এক জায়গায় সামুদ্রিক মাছ পুড়িয়ে খাওয়ার জন্য বিক্রি হচ্ছে। আমি একজন প্রচন্ড মাত্রায় মাছ প্রেমি বলে গরম গরম মাছ ভাজা টমেটো সস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। সন্ধ্যা নামতেই গায়ে কাঁপুনি দিলো ঠান্ডা। একটা চাদর গায়ে দিয়ে সমুদ্রের পাশে হাটতে থাকলাম। কি নীরব নিস্তব্ধ। কেবল ঢেউ এর আছড়ে পড়ার শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। একটা একটা করে তারা ফুটছে। একটা ছাতা নিয়ে সেই ছাতার নিচে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আকাশ জুড়ে তারার মেলা। তারা রাও যে এত বড় আর স্পষ্ট ভাবে দেখা যায় এই প্রথম বুঝলাম। অপার্থিব সেই সৌন্দর্য্য দেখে আনমনেই দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। রাত বাড়তে লাগলো, এক সময় পুরো দ্বীপে আশেপাশে হারিকেনের আলো জ্বললো। নগর সভ্যতার এই আমি কত দিন কত বছর পর এমন একটা রাত পেলাম। মনে হচ্ছিলো যেন পুরোটাই একটা স্বপ্ন।

তখনই ভেবে বসলাম সেইন্ট মার্টিন এ আমি আর দ্বিতীয় বার আসবোনা। প্রথম বারের এই মুগ্ধতার রেশ থেকে যাকনা আজীবন।
বি.দ্র. ঘুরতে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন। এদেশ আমাদের, রক্ষা করার দায়িত্ব ও আমাদের।
লেখাঃ উম্মে আইমুন
চেয়ারম্যান
ইনসাইড ইঞ্জিনিয়ারিং
ইনসাইড ইঞ্জিনিয়ারিং